somogro.xyz

এলিফ শাফাকের লেখা বইসমূহ  

এলিফ শাফাকের লেখা বইসমূহ  

এলিফ শাফাক শুধু একজন উপন্যাসিক নন, তিনি আধুনিক সাহিত্যের একজন শক্তিশালী কণ্ঠ। তাঁর লেখনীতে একাধারে তুর্কি সংস্কৃতি, ইতিহাস, নারীবাদ, এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতিফলন ঘটে। এই লেখায় তুর্কি লেখিকা এলিফ শাফাকের উল্লেখযোগ্য কিছু বই এবং সেগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:  

এলিফ শাফাকের লেখা বইসমূহ

১. দ্য বাস্টার্ড অফ ইস্তানবুল (The Bastard of Istanbul)

এই বইটি তুরস্কের ইস্তানবুলের পটভূমিতে লেখা একটি পারিবারিক গল্প, যেখানে আর্মেনিয়ান গণহত্যার প্রসঙ্গটি উঠে আসে। এটি পরিবারের অন্তর্দৃষ্টিতে তথা, আসিয়া কাজানসির জীবন এবং তাঁর পরিবারের মাধ্যমে তুরস্কের রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক বাস্তবতার গভীর চিত্র তুলে ধরে। দ্য বাস্টার্ড অফ ইস্তানবুল বইটি কেবলমাত্র ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, বরং জাতিগত পরিচয় এবং ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্টের গল্প।  

২. দ্য থ্রি ডটারস অফ ইভ (The Three Daughters of Eve)

এই উপন্যাসটি একজন তুর্কি নারী, পেরির জীবনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। যেখানে তাঁর তুরস্ক এবং যুক্তরাজ্য নিয়ে বেশ কিছু অভিজ্ঞতার মিশ্রণ রয়েছে। বইটি ধর্ম, বিশ্বাস, এবং নারীর ভূমিকার মতো গভীর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে। পেরির মাধ্যমে শাফাক দেখিয়েছেন যে, কীভাবে একজন নারী তার ব্যক্তিগত জীবন এবং বৃহত্তর সামাজিক বাস্তবতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে।  

৩. টেন মিনিটস থার্টি এইট সেকেন্ডস ইন দিস স্ট্রেঞ্জ ওয়ার্ল্ড (10 Minutes 38 Seconds in This Strange World)

অত্যন্ত ব্যতিক্রমী একটি ধারণা নিয়ে এলিফ শাফাক এই বইটি লিখেছিলেন। যাতে যৌনকর্মী লেইলার গল্প ফুটে উঠে। যেখানে মৃত্যুর পর ১০ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড ধরে তাঁর মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে। এই সময়ে, লেইলা তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো স্মরণ করে। শাফাক এখানে তুরস্কের প্রান্তিক মানুষের গল্প তুলে ধরেছেন। এটি মানবতার প্রতি গভীর সহানুভূতির প্রতিফলন।  

৪. দ্য ফ্লী ব্ল্যাক ট্রী (The Flea Palace)

এই উপন্যাসটি একটি পুরনো অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং, বোনবন প্যালেস এবং তার বাসিন্দাদের ঘিরে আবর্তিত। দ্য ফ্লী ব্ল্যাক ট্রী এর প্রতিটি চরিত্রের মাধ্যমে ইস্তানবুলের সামাজিক জটিলতা এবং মানবসম্পর্কের বিভিন্ন দিক ফুটে ওঠে। এটি তুরস্কের নগর জীবনের অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে প্রকাশ করে।  

৫. হোনার (Honour)

“হোনার” বইটি পারিবারিক এবং সংস্কৃতিগত দ্বন্দ্ব নিয়ে লেখা। এটি একটি কুর্দি পরিবারের গল্প। যারা লন্ডনে বসবাস করে। তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কীভাবে তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, এবং পারিবারিক বন্ধনকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে এতে গভীরভাবে আলোচনা করা হয়েছে। 

৬. দ্য আর্কিটেক্টস অ্যাপ্রেন্টিস (The Architect’s Apprentice)

এই বইটি অটোমান সাম্রাজ্যের সময়কার এক স্থাপত্যশিল্পী এবং তাঁর শিক্ষানবিশ মিমার সিনানের গল্প। এতে সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের সময়কার সাম্রাজ্যের জাঁকজমকতা এবং শিল্পের প্রতি তাঁর  ভালোবাসা ফুটে উঠেছে। যা কিনা ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রতি শাফাকের গভীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রমাণ।  

৭. ফোর্টি রুলস অফ লাভ (The Forty Rules of Love) 

এলিফ শাফাকের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আলোচিত বই এটি। যা প্রেম এবং আধ্যাত্মিকতার গভীর তাৎপর্য প্রকাশ করে। যাতে দুইটি সমান্তরাল গল্পের মাধ্যমে আত্মার যাত্রা এবং ভালোবাসার চিরন্তন রূপ তুলে ধরে।

এলিফ শাফাকের প্রতিটি উপন্যাস তাঁর বহুমুখী প্রতিভার উদাহরণ। বাংলা ভাষায় তাঁর বইগুলো পড়া এখনো সহজলভ্য না হলেও, অনুবাদ পড়ে তাঁর চিন্তাধারা এবং লেখার শৈলী উপলব্ধি করা যায়। তাঁর প্রতিটি কাজ আমাদের ভাবনার গভীরে প্রবেশ করায় এবং জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে শেখায়।  

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top